আড়াইহাজারে ঐতিহ্যবাহী একটি জমিদার বাড়ী হলো স্থাপত্যশৈলীর অনুপম নির্দেশনা বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি। স্থানীয়ভাবে বলা হয় বাইল্যাপাড়া জমিদার বাড়ি। আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া এলাকায় এই বাড়িটির অবস্থান।ঐতিহ্য বুকে ধারন করে লাল ইট ও চুন সুরকির মিশ্রণে তৈরি বাড়িটি এখনো কালের স্বাক্ষী হিসেবে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে।
তিন তিলা এল প্যাটার্ণের বাড়ি। বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি নিয়ে বাজারে অনেক কথাই প্রচলিত। তবে অধিকাংশই শোনা কথা। এই বাড়িটির ইতিহাস একশ বছরের পুরনো। বাড়িটির মালিক জমিদার মুকুন্দ মুরালির কোন বংশধর এখানে থাকে না। দেশ বিভাগের পরপরই তারা ভারতে চলে যায়।
যাওয়ার আগে তাদের সমস্ত জমাজমি বিক্রি করে দিয়ে যায়। স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে বাড়িটি রেখে দেয়। জমিদার মুকুন্দ মুরালি তাঁর এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জে। সে কারণে তিনি বালিয়াপাড়া বাড়িটি বিক্রি করেননি। দেশ বিভাগের আগ পর্যমত্ম জমিদার মকুন্দ মুরালি এই বাড়িতেই বসবাস করতেন।
জনশ্রুতি আছে, বালিয়াপাড়া রাজবাড়ির মালিক মুকুন্দ মুরালি প্রথম জীবনে হিন্দু জমিদার কিশোরী পোদ্দারের খাজাঞ্চি ছিলেন। অনেক পড়ে মুকুন্দ মুরালি জমিদারী লাভ করেন। জমিদার হলেও মূলত: তারা ছিলেন বণিক শ্রেণীর। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবসা করতেন।
প্রজাবৎসল হিসেবেও তাদের বেশ সুনাম ছিল।অন্যান্য অঞ্চলের জমিদারদের মত কোন অত্যাচার নিপীড়নের ইতিহাস তাদের নেই।অবশ্য দেশ বিভাগের খুব বেশি আগে তারা জমিদারী পাননি। ফলে তাদের জমিদারী ইতিহাস দেশ বিভাগের পরপরই সমাপ্তি ঘটে। দেশ বিভাগের পর তারা সবাই ভারতে চলে যায়। তবে ১৯৫৬ইং থেকে ১৯৬৫ইং সময়টা পর্যন্ত তারা মাঝে মধ্যে এদেশে আসতেন।
তখন তারা এই বাড়িটিকেই থাকতেন। তিল তলা বাড়িটি তখনও ছিল বেশ জমজমাট। ১৯৬৫ইং এরপর এক প্রচন্ড ঘুর্নিঝড়ে বালিয়াপাড়া হাইস্কুলটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। টিনসেড ঘর ভেঙ্গে-চুড়ে একাকার হওয়ায় স্কুলটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। তখন এলাকাবাসী জমিদার মুকুন্দ মুরালি কাছে যান। সবাই জমিদারকে স্কুলটি চালু করার জন্য অনুরোধ করেন।
এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মুকুন্দ মুরালি এক অভিনব প্রস্তাব রাখেন। প্রস্তাবটি শুনে অভিভুত হয়ে যায় এলাকাবাসী। জমিদার বাড়িটিতেই স্কুল চালু করার কথা বললেন মুকুন্দ মুরালী।প্রসত্মাবটি সবাই লুফেনেন।
১৯৬৬ইং সালে জমিদার মুকুন্দ মুরালি ৫ হাজার টাকা দলিল মূলে বালিয়াপাড়া হাইস্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে জমিদার বাড়িটি লীজ প্রদান করেন। বালিয়াপাড়া হাই স্কুল তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন মরহুম তোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী। তিনি ছিলেন বৃহত্তর সিলেট এর হবিগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। খুব পরহেজগার ও কামেল লোক তোজাম্মেল হোসেন চৌধুরীকে এলাকাবাসী খূবই শ্রদ্ধা করতেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস